মন্দের পরিবর্তে উত্তম পন্থা অবলম্বন
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
মন্দের পরিবর্তে উত্তম পন্থা অবলম্বনের গুরুত্বপূর্ণ তালীম হচ্ছে, যে অসদাচরণ করে তাকে শুধু ক্ষমা করে দেয়াই যথেষ্ট নয় বরং তার সাথে সদ্ব্যবহার করাও উচিত। যে বৈরীভাব পোষণ করবে, তার সাথে উত্তম আচরণ করাও এই শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। এই ঐশী তালীমের উপর আমলকারীদের নাম আল্লাহপাক ধৈর্যশীল, সৌভাগ্যশীল ও মর্যাদাশীল রেখেছেন এবং বলে দিয়েছেন যে, দুশমনকে দোস্ত বানানোর এটা হচ্ছে উত্তম তদবীর। আল কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে : ভালো এবং মন্দ সমান হতে পারে না, তুমি উত্তম ব্যবহার দ্বারা মন্দ প্রতিহত কর, ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে যাবে, কেবল তাদেরকেই এই গুণের অধিকারী করা হয় যারা ধৈর্যশীল এবং এই গুণের অধিকারীরাই সৌভাগ্যশীল হয়ে থাকে। (সূরা হা মীম সেজদা : ৩৪-৩৫)।
এই মহৎ শিক্ষাকে মহান আল্লাহপাক বড় সৌভাগ্যের দ্বারা বিশ্লেষণ করেছেন। এর দ্বারা মূল্যমান অনুমান করা যেতে পারে। তারপর অন্য এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, কাফের এবং মুশরিকদের গালমন্দকে খারাপ ভেবো না কেননা, ধর্মীয় কাজে ও রাগের বশবর্তী হয়ে নিরর্থক ও অশিষ্ট আচরণ করা শয়তানের কাজ। যদি এমন অবস্থার সম্মুখীন হও তাহলে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাতে থাকবে, যেন তিনি শয়তানের প্ররোচনা হতে রক্ষা করেন এবং রাগ ও গোস্বা দমন করার উপায় করে দেন।
এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে : ‘যা উত্তম তা দ্বারা মন্দের মোকাবেলা কর, তবে তারা যা বলে সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবগত। বল, হে আমার প্রতিপালক! শয়তানের প্ররোচনা হতে আমি তোমার আশ্রয় কামনা করি, হে আমার প্রতিপালক! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি হতে তোমার আশ্রয় কামনা করি।’ অন্য এক আয়াতে মহান আল্লাহপাক নামায, খয়রাত, ধৈর্য এবং ক্ষমার উল্লেখ করেছেন এবং এ সকল কাজের বিনিময়ে জান্নাত প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
কিন্তু উপরোল্লিখিত যাবতীয় পুণ্যকর্মের মাঝে শুধুমাত্র ধৈর্যকে জান্নাত লাভের উপকরণ সাব্যস্ত করে ইরশাদ করেছেন : ‘যারা তা অবিচ্ছিন্ন রাখে যা অবিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ আল্লাহপাক তাদেরকে দিয়েছেন (অর্থাৎ পরস্পর হক ও অধিকার) এবং যারা স্বীয় প্রতিপালককে ভয় করে এবং হিসাব-নিকাশের নিকৃষ্ট পরিণামকে ভয় করে এবং যারা স্বীয় প্রতিপালকের সন্তুষ্টির জন্য ধৈর্যধারণ করে এবং নামায আদায় করে এবং আমি তাদেরকে যে রুজী দান করেছি তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খয়রাত করে এবং বদীর মোকাবেলায় সদাচরণ করে তাদের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে পরকালের অবিনশ্বর নিবাস।’
এই শ্রেণির জান্নাতীদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে : তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক এর বিনিময়ে যে তোমরা ধৈর্যধারণ করেছ, কত উত্তম পরকালের চিরস্থায়ী নিবাস।’ সহৃদয় পাঠক! আপনি অবশ্যই লক্ষ্য করেছেন যে, জান্নাতের এই অদৃশ্য শুভ সংবাদের মাঝে না নামাযের উল্লেখ আছে, না দান-খয়রাত ও আল্লাহর ভয়ের কথা উল্লেখ আছে, বরং এ হচ্ছে একমাত্র ধৈর্যের বিনিময়ের শুভ সংবাদ। তাছাড়া এই আয়াত হতে এটাও বুঝা যায় যে, মন্দের পরিবর্তে ভালো আচরণ করা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা নামায এবং যাকাতের মত অপরিহার্য আমলের পাশে অবশ্যই উল্লেখ করা যায়।
অন্য একটি আয়াতে নওমুসলিম ইহুদিদেরকে তাদের বিরুদ্ধপক্ষ স্বগোত্রীয়দের নিকট হতে সকল বেদনাদায়ক কথা ও ধ্বনি শুনতে হয় এবং যে সকল অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয় এবং এগুলোর উপর ধৈর্যধারণ করতে হয় তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। ইসলামের প্রাণস্পর্শী প্রভাবে আজ তাদের অবস্থা এখানে পৌঁছেছে যে, তারা মন্দের স্থলে ভাল কাজকে অগ্রাধিকার প্রদান করে।
এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে : ‘তাদেরকে দু’বার পারিশ্রমিক প্রদান করা হবে, কারণ তারা ধৈর্যশীল এবং ভালোর দ্বারা মন্দের মোকাবেলা করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা উপেক্ষা করে চলে আসে এবং বলে, আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য, তোমাদের প্রতি সালাম, আমরা তোমাদের সঙ্গ কামনা করি না।’ এই আয়াতের এক একটি অংশের উপর গভীর দৃষ্টিতে তাকালে দেখা যায় যে, তারা শুধু কেবল মন্দের মোকাবেলা ভালোর দ্বারাই করেননি এবং কেবলমাত্র ক্ষমা ও অনুকম্পাই প্রদর্শন করেননি, বরং তাদের জন্য সালামতি, শান্তি ও নিরাপত্তার প্রার্থনাও জানিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আত্মীয় প্রতিবেশীদের হক আদায়কারী ব্যক্তি সে নয়, যে এহসানের বিনিময়ে এহসান করে এবং সেই ব্যক্তিই হক আদায়কারী যে অসদাচরণের বিনিময়ে সদাচরণ করে।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা
ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি কেরানিগঞ্জে গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে বান্দরবানে কেএনএফের ৩ সদস্য নিহত
রাজশাহীতে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশকে মারপিট, যুবক আটক
স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে ইসলামী
খালেকুজ্জামানের বাড়ী সরকারিভাবে পুননির্মাণের দাবি - ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাবেক বিজেপি নেতা
সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: প্রেসিডেন্ট
বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর, অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
কিরগিজস্তানে আহত বাংলাদেশি ছাত্রদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনুন
শিরোপার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা : শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে সিটি-আর্সেনাল
কোরবানির গোস্ত দিয়ে কোন অনুষ্ঠান করে টেবিল বসিয়ে টাকা বা উপহার নেওয়া প্রসঙ্গে।
মানিকগঞ্জ-ঢাকা রেললাইন প্রসঙ্গে
কমিউনিটি ক্লিনিক দাঁড়িয়ে আছে দোরগোড়ায়
ব্যাংক ও আর্থিক খাতে বেপরোয়া লুটপাট
বেগম সুফিয়া কামাল এবং কবি ও সাহিত্য সমালোচক আবদুল কাদির নানাভাবে দেশের শিল্প-সাহিত্যকে ঋদ্ধ করেছেন : সেলিনা হোসেন
নগরমুখী জনস্রোত রোধ করতে হবে
২৪ ঘন্টা থেকে সাত দিনের মধ্যে মৃত বীমা দাবি পরিশোধ করবে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনসুরেন্স কোম্পানি