কবিতা
২১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫১ এএম | আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫১ এএম

যে নদী গোমতী নামে বাঁচে
মীর্জা আবু হেনা কায়সার
আমার শৈশবের নদীটা বুকের ভিতর
এখনও খলখল করে হাটে।
দুরন্ত বয়স পেরিয়ে আমি কবেই
মুখ ফিরিয়েছি তার চলার পথ,
গোমতী তীরে বিকেলের ছায়ামায়া ছুয়ে
বসে থাকার দিনগুলো মনে পড়ে।
দুমকলের ঠেরঠের পানি তোলার শব্দ
ওপারে অনুষ্ঠানের মাইকে বেজে উঠেছে গান
শিশুমনে সে গানের স্পর্শ,
রাস্তার কিনারের ঘর......
চোর ও ডাকাইতের ডর.....
খেয়া নৌকা এপার ওপার
নদীতে হাটছে নৌকোরা
নানুয়ার বাজার ঘাট গোবিন্দপুর ঘাট
পাতিলের নাও পাটের নাও
ভাসমান যাযাবর বেদের নাও
এতো নাও খেলা করে আমার ভিতরে
নদী শান্ত, অশান্ত ¯্রােত
স্বচ্ছ জলের ঢেউ ঘোলা জলের বয়ে চলা
যে নদী গোমতী নামে বাঁচে
আমার মনে আজও আছে, মনে আছে।
সাঁতার
আশরাফ চঞ্চল
নদীতে তীব্র ঢেউ
বাতাসে মাদকতার গন্ধ
ওপারে নৃত্যমগ্ন অনিন্দ্য সুন্দরী
ডাকছে ইশারায়!
ঈশান নৈঋতে জমেছে অনেক মেঘ
এই বুঝি ফুঁক দিল বাঁশিতে ইসরাফিল
ভয়ের ডঙ্কা বাজছে বিজলির চমকে চমকে
নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে ঘাটের মাঝিমাল্লা!
কোনদিন নামিনি ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ জলে
সুন্দরীর প্রলোভনে মাথা গেছে ঘুরে
আনাড়ি সাঁতারু আমি কেমনে যাই ওপারে
সাঁতারে সাঁতারে...!
দুঃখের আলখেল্লা
বশির আহমেদ
দুপুরের ভাঁটফুলে মিশে গেছে প্রজাপতির যৌগিক চোখ
বসন্তের কুচকাওয়াজে প্রকৃতি মুছে ফেলে বিবর্ণ দেহের ক্ষত! পথে পথে মেহগনি সুখ।
ঈশ্বরের আরাধ্যে সংযমী মাস ন্যাতিয়ে যায় গুনাহ নদী।
কর্পোরেট নিঃশ্বাসে প্রশস্ত হয় বাঁচার তাগিদ,
দুষ্প্রাপ্য বাসনায় উজালা আকাশে ছুটে যায় পাখি মন। জীবনের জংশনে বিধান্বিত কোন পথে যাবে আয়ুর ট্রেন
পত্রহীন আমলকীর ডালে দুঃখ সেলায় বৈশাখী সুখ,
দুঃখের আলখেল্লা খুলে সবুজ সম্ভারে মাঝে মাঝে মিশে যায় বর্ণচোরা জীবন।
ডাইনিং টেবিলের পাশে
তাজ ইসলাম
একটা ঈদ টেবিলের চারপাশে বসে আছে চেয়ারে চেয়ারে।
মা বন্টন করছেন মমতা। প্লেটে থরে থরে সাজিয়ে
রাখছেন টুকরো টুকরো আনন্দ। উৎসবের বহুমুখী উচ্ছ্বাস।
একটা চেয়ার দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছে আনন্দের সমস্ত আয়োজনে।
সে চেয়ার থেকে শূন্যতার বিভীষিকায় গ্রাস করছে সমস্ত ঘরবাড়ি।
আর্তনাদে বেদনার আকাশ ভারী হয়ে আসছে।
গতবছর বাবা তার পুত্রদের নামে কিনে এনেছিল একরঙা ঈদ।
পিতাপুত্রের গায়ে গায়ে ঈদ আনন্দরা উপচে পড়েছিল কাতারে কাতারে ম্যাচিং করা পাঞ্জাবী কালারে।
এই শূন্য চেয়ারে যে ছেলেটি ছিল সে এখন জুলাইয়ের রক্তাক্ত মুখ।
সে এখন ইতিহাসের পৃষ্ঠায় বসে আছে।
সে এখন মায়ের আঁচল ভরা দুঃখ।
সেই এনে ছিল মায়ের জন্য পাঞ্জাবী সূত্রের শাড়ি।
মা তার লাজুক হাসি গুঁজে রেখেছিল সেমাইয়ের ভাঁজে ভাঁজে।
মায়ের এই ছেলেটির প্রিয় ছিল প্রজাপতি
প্রিয় ছিল মায়ের ছবি ছবি মুখ
আর প্রিয় ছিল মাতৃভূমির প্রিয় মাটি।
মাতৃভূমি তার প্রিয় পবিত্র, প্রশান্তির সেজদার স্থান।
এবং লাল রঙ তার প্রিয় ছিল।
বুকের রক্ত দিয়ে জুলাইয়ের রাজপথ সে রাঙিয়ে তুলেছিল।
বাঁধভাঙা উল্লাসে সে নেমেছিল পথে।
দেশের বুক থেকে তাড়িয়ে দিতে অন্ধকারের ঘোর।
রাজপথে তার মুষ্টিবদ্ধ হাত থামাতে
জুলাইয়ের কসাই তার বুকে বিঁধিয়ে দিল সীমারের ছোঁড়া।
অজ¯্র বুলেট, বুলেটেরা এসেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে হেলিকপ্টারেও তারা নেমে এসেছিল এই জনপদে।
একটা বুলেট বিঁধে ছিল মায়ের আদরের পুত্রের বুকে।
সেই থেকে এই একটি চেয়ারে নেমে আসছে সমস্ত হাহাকার।
মায়ের চোখ থেকে নেমে আসে বেদনার ফোরাত।
আজ পবিত্র আনন্দময় ঈদ। মাতৃ হৃদয় শূন্য চেয়ারটির কাছে এসে
সমস্ত আনন্দকে আর্তচিৎকারের ¯্রােতে ভাসিয়ে নিচ্ছে।
আজ ঈদ, ঘরময় ঈদের সুবাস, মা নির্বাক তাকিয়ে আছেন শূন্য চেয়ারটির দিকে।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে মরলো ৩ গরু

মাগুরায় মা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষার্থী ফাইয়াজের মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার আহ্বান আইন উপদেষ্টার

মার্কিন শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এক হাজার পোশাক কারখানা, মালিকদের শঙ্কা

ঢাকায় তৎপর ‘র’! জুলকারনাইন এর চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস!

ভবেশের মৃত্যুতে ভারতের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

শার্শায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক ২

সার্বজনীন না করে সেকুলার নারীদের দিয়ে কমিশন গঠন করায় একটা ক্যাচাল তৈরি হয়েছে : রাশেদ খান

আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া দেওয়ান পিস্তলসহ গ্রেফতার

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বিএনপি

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আশুলিয়ায় নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর ঘরে আগুন, স্বামী পলাতক

রাজধানীতে যুবদল নেতাকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ

লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার

বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি

সবাই চায় স্বৈরাচার মুক্ত একটি বাংলাদেশ–বাঁধন

মিয়ানমারের দুই শতাধিক নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের

কোটচাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছয়লাব পার্থেনিয়ামে এই গাছ হতে পারে মৃত্যুর কারণ