অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের দাবি

ভ্যাট বাড়লেও জিনিসপত্রের দামে প্রভাব পড়বে না

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ এএম

পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়লেও জিনিসপত্রের দামে প্রভাব পড়বে না দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) বাড়লেও জিনিসপত্রের দামের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। আপনি ছাড়টা দেখবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি মূল্যস্ফীতির মূল ওয়েটের ইন্ডিকেটরগুলো হলো চাল, ডাল এগুলো; সেটা আপনারা জানেন। আমরা যে সকল জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছি, এগুলো আমাদের মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুবই কম গুরুত্বপূর্ণ।

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। ৪৩টি পণ্যে ভ্যাট বাড়ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন করে ভ্যাট আরোপ হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ওপর এটির নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এতে জিনিসপত্রের দামের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের ডিউটি জিরো করে দিয়েছি। আপনি ছাড়টা দেখবেন। মূল্যস্ফীতির মূল ওয়েটের ইন্ডিকেটরগুলো হলো চাল, ডাল এগুলো; সেটা আপনারা জানেন। আমরা যেসব জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছি, এগুলো আমাদের মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুবই কম গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, তিন তারকার ওপরে যে রেস্টুরেন্টগুলো সেগুলোর ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। ভাতের রেস্টুরেন্ট বা অন্য রেস্টুরেন্ট থেকে তো যাবে না। থ্রেসহোল্ড আছে, যাদের টার্ন ওভার ৫০ লাখ টাকার ওপরে, তাদের ক্ষেত্রে এটা আসবে। অন্য কোনো ব্যবসা তো এটার মধ্যে আসছে না।

বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়া প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিমানের ভাড়ার ক্ষেত্রে আগে ৫০০ টাকা ছিল, সেটি ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিমানে এখন লোকজন মোটামুটি চড়ে। তারা ২০০ টাকা বেশি দিতে পারবে না বলে মনে হয় না। এগুলো মার্জিনাল। পৃথিবীর কোনো দেশেই কিন্তু নেপাল, ভুটান ধরেন, এত লো ট্যাক্স কোথাও নেই। সব জিনিসের ওপরে। এসেন্সিয়াল জিনিসের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় বলেছি, সেখানে আমরা প্রায় জিরো করে নিয়ে আসব। চূড়ান্তভাবে ভোক্তা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিচ্ছে না। ইনপুটের জন্য সে রিবেট পাবে। জিজ্ঞেস করেন, সেটা ওরা জানে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ মাস পরে এই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা করার কারণটা হলো যে ছাড় দিয়েছি, সেটা হিসাব করে দেখা যাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর আমাদের রাজস্ব গ্যাপ এত বেশি, আমি তো আর বড় করে ডেফিসিট ফাইন্যান্সিং করে এগোতে পারব না।

আইএমএফের পরামর্শে এটি করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না, সব দিক চিন্তা-ভাবনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনে হয় না কষ্ট হবে।
জনগণ স্বস্তি পাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের স্বস্তি না পাওয়ার তো কোনো কথা না। তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি খাতে আমরা বরাদ্দ কমাব না। বরং আমরা বৃদ্ধি করব। কিন্তু আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ধার করে বেশিদিন চলা যায় না। ট্যাক্স এবং কাস্টমস পর্যালোচনা এখনো বাকি আছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। এসব ক্ষেত্রেও বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখন বলব না।

নতুন বছরে অর্থনীতিকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি মোটামুটি স্ট্রং তো হয়েছে, এখন দরকার স্থিতিশীলতা। আমি বলব না, সব ক্ষেত্রে এটা হয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে কিছু শৃংখলা ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করছে, কিছু কিছু দুর্বল ব্যাংকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে
সিন্ডিকেটের প্রভাবে কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজচাষীদের মাথায় হাত
বছরজুড়ে সড়কে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা
বর্ষপণ্য আসবাবপত্রের মূল্য আকাশচুম্বি
চাঁদাবাজ-দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই :কুষ্টিয়ায় জামায়াতের আমির
আরও

আরও পড়ুন

ব্রাইটনের বিপক্ষে আর্সেনালের হোঁচট

ব্রাইটনের বিপক্ষে আর্সেনালের হোঁচট

টানা দ্বিতীয় জয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত সিটির

টানা দ্বিতীয় জয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত সিটির

রিকেলটনের মহাকাব্যিক ইনিংস,রান পাহাড়ের চাপে পাকিস্তান

রিকেলটনের মহাকাব্যিক ইনিংস,রান পাহাড়ের চাপে পাকিস্তান

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল