নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০৪ পিএম | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে জনমনে এ নিয়ে ততই বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। নির্বাচন কিভাবে হবে, আদৌ হবে কি না এসব নানা প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিুল আউয়াল নিজেও আগামী বছর জানুয়ারি শুরুতেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবেন সেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে চরম মতবিরোধ চলছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রত্যেকে এক দফা দাবিতে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে। আওয়ামী লীগের এক দফা হচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে ছাড়া নির্বাচন নয়। আর বিএনপিসহ সমমনা অন্যান্য দলগুলোর একদফা হচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন নয়। তারা বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে যাচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রশাসন দলীয়করনের ফলে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন সেই জেলা প্রশাসকদের কেউ কেউ সরকারের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চাচ্ছে। এর ফলে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ওই দুইটি নির্বাচনের মতো আসন্ন নির্বাচনও এক তরফা হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেও আলোচনা হয়েছে। গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক, অস্পষ্টতা ও হতাশা বিরাজ করছে। অনেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কখন ও কীভাবে নির্বাচন হবে এ বিষয়ে সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করছে না। ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতার দাপটে নির্বাচন করেছে। সরকার গঠনের জন্য যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, সেই সংখ্যক সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি। ২০১৮ সালেও অধিকাংশ জায়গায় আগের রাতে ভোট হয়। সেবারও জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। এবার কি হবে তা নিয়ে জনগণ উদ্বিগ্ন। সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ। অথছ তারাই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। সোনার বাংলার গণতন্ত্র আজ কোথায় যাচ্ছে?
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। মুখে বলা হলেও বাস্তবে নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতা নেই।নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনকে দলীয় করণ করা হয়েছে। তাদেরকে রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের বাস্তবে কিছুই করার ক্ষমতা নেই। দলীয় সরকারের অধীনে তারা তাদের ক্ষমা প্রয়োগ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিকল্প পন্থা প্রয়োজন। বর্তমান সঙ্কট তৈরী হয়েছে আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে। তাই এ বিষয়ে আদালত ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছালে বর্তমান সঙ্কটের সমাধান হতে পারে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জামালপুরের ডিসি প্রকাশ্যে মিটিংয়ে সরকারের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। ডিসি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। এই খবর সব পত্রপত্রিকায় এসছে। এই ডিসিদের দিয়েই নির্বাচন করতে হবে। এদের দিয়ে ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য) নির্বাচন সম্ভব নয়।
সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, সরকার না চাইলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব না। যতগুলো ভালো নির্বাচনের উদাহরণ আছে, সেগুলো দলীয় সরকারের বাইরে হয়েছে। আর সে সরকার চেয়েছে বলেই হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়
কালীগঞ্জে ভাইরাল চিতাবাঘ হত্যার ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়
আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ; আহত-১৩
সউদী আরবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য দুই নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
শুটিংয়ে গিয়ে আপত্তিকর আচরণ করায় নির্মাতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা
সালাম মুর্শেদীর ৪ মামলার জামিন নামঞ্জুর
সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গবিসাসের নতুন সভাপতি সানজিদা, সম্পাদক ইভা
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
খুবির উৎকর্ষ সাধনে পাশে থাকবে ইরান
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের দাবি হরিরামপুর-শিবালয়বাসীর
গোয়ালন্দে সুইট হাট জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের
হঠাৎ কেন দোয়া চাইলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া!
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে ফেলছে : শিক্ষা উপদেষ্টা
এবার ৯৭ বলে অপরাজিত ২০১ রিজভির
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক
বাংলাদেশী রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত, সমালোচনার ঝড়
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে নিয়ে জনগণের অসন্তোষ