সংস্কারের প্রাসঙ্গিকতা
২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম
সংস্কার শব্দটির সাথে পরিচিত নয়, এমন মানুষ এ দেশে এখন খুব কমই পাওয়া যাবে। মূলত জুলাই-আগস্টের ছাত্র-গণ আন্দোলনের পরেই এই শব্দটি দেশের সকল লোকের কাছেই কমবেশি পরিচিত। সংস্কার শব্দটির আক্ষরিক অর্থ মেরামত করা, সংশোধন করা। অন্যভাবে বললে বলতে হয়, ভালো করা বা ভালো হয়ে যাওয়া। বিগত দিনের ভুল শুধরে নেয়ার এটাই মোক্ষম সময়।
এখন আসা যাক রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গে। রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্য হলো স্থিতিশীলতা, সুশাসন এবং জনগণের জন্য কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করা। উন্নততর নীতি ও সিস্টেমের মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ, উন্নয়নকে তরান্বিত করা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেয়ার মাধ্যমে তারা বিদ্যমান সংবিধান রক্ষারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একদিকে ক্ষমতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্তূপিকৃত বিশাল জঞ্জাল সাফ করা যেমন তাদের দায়িত্ব, সেইসঙ্গে নতুন কিছু গড়ার বিষয়ও আছে। এটি এক বিশাল সংস্কারযজ্ঞ। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-গণ আভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতন হয়েছে এবং জনগণ ছাত্রদের সঙ্গে মিলে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার বলেও ইতোমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে। এ সরকারের প্রধান দায়িত্ব প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কারপূর্বক সর্বজন ও সর্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জনসাধারণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দুর্নীতি নামক দুরারোগ্য সামাজিক ব্যাধির মূলোৎপাটন করাও এ সংস্কারের অন্যতম লক্ষ্য।
দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে আপন মেরুদ-ের উপর দাঁড়াতে সক্ষম করে তোলাটাও তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
রাষ্ট্রকে নতুন করে পুনর্গঠনের কাজ অবশ্যই জরুরি। তা না হলে রাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠান নড়বড়ে অবস্থায় অবস্থান করছে, সেগুলোকে কার্যকর করে তোলা যাবে না। তবে অন্তর্বর্তী সরকার একা সবকিছু করতে পারবে না। সেখানে দেশের জনগণের ভূমিকা রাখতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত অর্জনের লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে কতগুলো প্রযোজনীয় বিষয়; যেমন- দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, প্রশাসনিক ও প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ নারীর ক্ষমতায়ন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা ইত্যাদি।
পরিশেষে বলা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশে সমান ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। বাংলাদেশকে উন্নত ও সুশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত করা রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে সম্ভব। তবে এর সাথে সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষ নেতৃত্ব ও জনগণের অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা একান্ত প্রয়োজন। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা ফিরিয়ে অনতে হলে রাষ্ট্র সংস্কারের বিকল্প অন্য কিছু নেই।
লেখক: ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক পিএলসি।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইপিএল নিলামে নাম না তোলার ব্যাখ্যা দিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার
‘চিকিৎসা নিতে করাচি যান, ভারতে নয়’, বাংলাদেশিদের ভিসা বাতিলের দাবি শুভেন্দুর
বৃষ্টির কবলে দ. আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট
ইসকন দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে - বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন
আওয়ামী নেতাদের নির্দেশে চট্রগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টির ব্যর্থ চেষ্টা
সাত কলেজ অনার্স প্রথম বর্ষের কালকের পরীক্ষা স্থগিত
নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের ১২ নেতাকর্মীর পদত্যাগ কমিটি বাতিলের দাবি
মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মহা জট, ফড়নবিশকে জরুরি তলব দিল্লিতে
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান ফখরুল ইসলামের
আইনজীবী সাইফুল হত্যাকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বহিষ্কার
আইনজীবী হত্যার অবিলম্বে বিচার চাই -ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণ
ফ্যাসিবাদের দোসর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন’কে নিষিদ্ধ করা হোক আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ
ভারতের প্রেসক্রিপশনে ইসকন বাংলাদেশে অশান্তি করছে: হাসনাত
ডোমিনোজ পিৎজা এখন মহাখালীতে
বিএনপি জনগণের দল, 'ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দিন' অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া
ইসকন ভারতের হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দেশব্যাপী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু
ইসকনের মিথ্যাচার ও ভারতীয় মিডিয়ার সিন্ডিকেট নিউজ
ঋণগ্রহীতা মারা যাওয়ার পর পাওনাদার তার পাওনা মাফ করে দেওয়া প্রসঙ্গে।
আওয়ামী লীগের ফিরে আসা কঠিন