ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

শের শাহ শুরি : প্রজ্ঞার প্রতাপ-৭

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

১২ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম

অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনী বিন্যস্ত করেন শের শাহ। সেনাবাহিনীর পদায়ন, আনুগত্য, চেইন অব কমান্ড এবং কাজকর্মের তদারকি নিশ্চিত করেন। সেনাদের তিনি মোতায়েন করেন দেশের নানা প্রান্তে, শহরে ও জনপদে। সেখানে তৈরি হতো উন্নত সেনানিবাস। সেনানিবাসের কর্তা হতেন একজন ফৌজদার। এই সেনাশৃঙ্খলা প্রবর্তনের পথ রচনা করেন সম্রাট আলাউদ্দিন। রাজধানীকে অনিরাপদ রাখার বিপদ নিয়ে সচেতন ছিলেন শের শাহ। সম্রাটের অধীনে তাই সবল, বিশাল একটি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকতো। সেখানে পদাতিক পঁচিশ হাজার আর অশ্বারোহী দেড় লক্ষ সৈন্য থাকতো।

বিচ্ছিন্ন-বিভক্ত নানা অঞ্চলে ডাকাতি ছিলো ভারতের পুরনো সমস্যা। বিশেষত জঙ্গল ছিলো ডাকাতদের অভয়ারণ্য। তাদের সাথে যুদ্ধ ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক। ছোটখাট বিদ্রোহ, আঞ্চলিক শক্তির হুমকি ইত্যাদির সাথেও লড়াই ছিলো চলমান। যুদ্ধ হতো তীব্র। কৌশলে সম্রাট ছিলেন অগ্রণী। কিন্তু জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা সকল কৌশলের বড় কৌশল। সেনাবাহিনীর যুদ্ধযাত্রার ফলে ফসল বা সম্পত্তির ক্ষতি হলে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ করা হতো এবং তা সরাসরি শের শাহের রাজতহবিল থেকে।

তথ্য সংরক্ষণের উপর শের শাহের ছিলো বিশেষ দৃষ্টি। সেনাবাহিনীর সদস্যদের নাম ও কর্মকা-ের রিপোর্ট তো থাকতে হবেই, সাথে সাথে সংরক্ষিত হবে সকলের দৈহিক বিবরণ। এই ব্যবস্থার নাম হলো হুলিয়া।
সেনাবাহিনীতে ছিলো ঘোড়া ও হাতি। যাদের সংখ্যা বাড়ানো হয় এবং ব্যবহারের উন্নত কৌশল প্রবর্তন করা হয়। প্রত্যেকের ঘোড়ায় থাকতো বিশেষ চিহ্ন। আজকের গাড়ির নাম্বারের মতো তা দিয়ে আলাদাভাবে শনাক্ত করা যেতো। এ ব্যবস্থার নাম ছিলো দাগ বা শনাক্তকরণ।

আইনশৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ শান্তিরক্ষা করতো পুলিশ। গ্রামে গ্রামে তারা নিয়োজিত ছিলো। গ্রামে শান্তি ও নিরাপত্তার তদারকি করতো গ্রাম প্রশাসন। পঞ্চায়েত ও গ্রামপ্রধানগণ পুলিশের কাছ থেকে জবাবদিহি নিতো আর তাদের থেকে জবাবদিহি নিতো স্থানীয় সরকার। গোটা ব্যাপারটা কঠোর তদারকির আওতায় ছিলো। এর ফলাফল ছিলো অসাধারণ। আবুল কাশেম ফেরেশতার ভাষায়, জননিরাপত্তা ছিলো অবারিত। পথের ধারে ঘুমিয়ে থাকা অচেনা মুসাফিরের সম্পদ কেউ চুরি করবে না, এই নিশ্চয়তা জন্মেছিলো পথচারীদের মনেও।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা