ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য

Daily Inqilab মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান

১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম

সৃষ্টির প্রথম থেকেই মানুষের ফিতরাত বা স্বভাব হচ্ছে এই যে, মানুষ সুন্দর, আনন্দদায়ক, কল্যাণকর কোন বস্তু, ব্যক্তি ও ঘটনায় আনন্দিত হয়, আর অসুন্দর, দুঃখজনক ও অকল্যাণকর অবস্থায় ব্যথিত হয়। স্বভাব এমন যে, দুঃখের জীবন থেকে বের হয়ে আসতে সে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে। ইতিহাসের পাতা উল্টালে অসংখ্য ঘটনা পাওয়া যাবে যখনই মানুষ অন্যায়, অসত্য ও জুলুম-নির্যাতনের স্টীম রোলারে নিষ্পেষিত হয়েছে তখনই মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রাণপণে খুঁজেছে একজন মুক্তিদাতা, ত্রাণকর্তা যাকে কেন্দ্র করে এবং যার নেতৃত্বে ঘটাবে সকল দুঃখের অবসান, চিরতরে বিলীন করবে সকল অশুভ শক্তিকে।

মানুষ যখনই এ দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেয়ে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেছে তখনই স্বধর্মীয়, স্বগোত্রীয় লোকদের নিয়ে করেছে আনন্দানুষ্ঠান। এ আনন্দানুষ্ঠানকে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ভাষায় বলা হয়েছে ঈদ। অভিধানে ঈদ বলতে বুঝায় : ‘কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি অথবা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়ার দিন বা স্মৃতিচারণের দিবসই ঈদ। কেউ কেউ বলেছেন, ঈদকে এজন্যই ঈদ বলা হয় যে, প্রতিবছর নব আনন্দ নিয়ে তা ফিরে আসে।’ (আল-মুন্জিদ, পৃ. ৫৩৯)

আর মিলাদ শব্দের অর্থ জন্ম সময়। (আল-মুনজিদ, পৃ. ৯১৮)। পারিভাষিক অর্থে মিলাদ বলতে জন্ম সময়, জন্ম বৃত্তান্ত তথা কারো জন্ম তারিখে তার জীবন চরিত আলোচনা ও তার জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের অঙ্গীকার করা। মিলাদ শব্দটি যদিও আরবি, কিন্তু আমাদের দেশে এর প্রচলন ফারসি ভাষা থেকে হয়েছে। অনেকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট না জেনে এ শব্দটি আরবি ভাষার আঙ্গিকে তুলে ধরে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করেন। ফারসিতে মিলাদ অর্থ জন্ম সময়। (ফারহাঙ্গে জবানে ফারসি, পৃ. ১০৬৭)

পবিত্র ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম বিশ্বের ঈমানি প্রেরনার জয় ধ্বনী নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে আসে রবিউল আওয়াল মাসে। পবিত্র ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্যতম উৎসব।

কোন নেয়ামত ও রহমত লাভ করলেই আনন্দোৎসব করা যেরূপ মানুষের স্বভাবজাত কাজ তদ্রূপ আল্লাহ তাআলার নির্দেশও তাই। যেমন কুরআন মজীদে এরশাদ হয়েছে : ‘(হে রাসূল!) বল : আল্লাহর অনুগ্রহে ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক।’ (সূরা ইউনুছ : ৫৮)

এ আয়াতে বর্ণিত আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর রহমত বলতে কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে ইবনে জারির তাবারী (রহ.) তাঁর তাফসীরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন : অনুগ্রহ বলতে ইসলাম আর রহমত দ্বারা আল-কুরআনে বুঝানো হয়েছে।

আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতী (রহ.) আদ্দুররুল মানসুর তাফসীরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন : ‘এখানে ‘আল্লাহর অনুগ্রহ’ বলতে ইল্ম বুঝানো হয়েছে। আর ‘রহমত’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে মুহাম্মাদ (সা.)-কে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আমিতো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।’ (সূরা আম্বিয়া : ১০৭)

অর্থাৎ তোমরা মহামূল্যবান সম্পদ আল-কুরআন ও ইসলাম বা রাসূলে খোদা (সা.)-কে পেয়েছ, এর জন্য আনন্দ করা তোমাদের অন্যতম কাজ। যদি কুরআন মজীদ ও দীন ইসলাম পাওয়ার কারণে আনন্দ করতে হয় তাহলে যার মাধ্যমে কুরআন ও দীন পেয়েছি, যিনি ছিলেন সমগ্র জগতের রহমত, তাঁর আগমন যে কত বড় নেয়ামত ও রহমত তা বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।

আবদুল হক মুহাদ্দেসে দেহলভী (রহ.) তাইতো তাঁর রচিত ‘মা সাবাতা মিনাসসুন্নাহ’ গ্রন্থে লিখেছেন : ‘হাজার মাসের চেয়ে উত্তম লাইলাতুল কাদর, ফজিলতের রাত্রি শবে বরাত, শবে মেরাজ, দুই ঈদের রাত এ সবই রাহমাতুল্লিল আলামীনকে দান করা হয়েছে। যাঁকে দান করা রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, স্বয়ং তাঁর আগমন দিবস যে কত লক্ষ-কোটি দিবস-রজনীর চেয়ে উত্তম তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।’

সামান্য জাগতিক নেয়ামত লাভ করলেও তার জন্য ঈদ উৎসব করার সরাসরি উদাহরণ আমরা আল-কুরআনে দেখতে পাই। যেমন আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ কামনা করে হযরত ঈসা (আ.) যে দোয়া করেছিলেন তা প্রণিধানযোগ্য। এরশাদ হয়েছে :

ঈসা ইবনে মারইয়াম বলল : হে আল্লাহ! আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য ঊর্ধজগৎ হতে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ করুন। এ হবে আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলের জন্য ঈদস্বরূপ, আর আপনার অন্যতম নিদর্শন।’ (সূরা মায়িদা : ১১৪)

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে খাঞ্চা ভরা খাওয়া পেলে তা যদি হযরত ঈসা (আ.)-এর ভাষায় সৃষ্টির আদি হতে অন্ত পর্যন্ত আনন্দোৎসবের কারণ ও আল্লাহ তাআলার নিদর্শন হয় তাহলে সৃষ্টির সেরা মানব, রহমতের ভা-ার রাসূলে পাক (সা.)-এর মতো এ মহান নেয়ামতের আগমন দিবস কতই না মর্যাদাবান, গুরুত্ববহ, কতই না আনন্দের তা সহজেই অনুমেয়।

হযরত ইমাম বুখারী (রহ.) বর্ণনা করেন : ‘আবু লাহাবের মৃত্যুর পর তার বংশের একজন স্বপ্নে তাকে খুবই খারাপ অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করল, আপনার অবস্থা কি? সে জবাবে বলল, তোমাদেরকে ছেড়ে আসার পর আমার কল্যাণজনক কিছুই হয়নি, হ্যাঁ, এই আঙ্গুল (শাহাদাত অঙ্গুলি) দ্বারা পানি পাই। কারণ, এ আঙ্গুলের ইশারায় আমি দাসী সুয়াইবাকে মুক্তি দিয়েছিলাম।’

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) তাঁর বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারী এবং আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (রহ.) তাঁর রচিত ‘আইনী’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন : ইমাম সুহাইলী (রহ.) উল্লেখ করেন যে, হযরত আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে স্বপ্নে দেখি যে, অত্যন্ত দুরবস্থার মাঝে পতিত রয়েছে। সে বলল, ‘তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি শান্তির মুখ দেখিনি। তবে প্রতি সোমবার আমার আযাব লাঘব করা হয়।’ হযরত আব্বাস (রা.) বলেন : ‘তার এ আযাব লাঘবের কারণ হলো রাসূলে পাক (সা.)-এর জন্মদিন ছিল সোমবার। তাঁর জন্মের সুসংবাদ নিয়ে আসায় দাসী সুয়াইবাকে সে খুশিতে মুক্তি দেয়। (ফাতহুল বারী, ৯ম খ-, পৃ. ১১৮; আইনী, ২০/৯৫)

যে কাফের সম্পর্কে কুরআন মজীদে সরাসরি নাযিল হয়েছে : ‘ধ্বংস হয়েছে আবু লাহাবের দু’হাত এবং সে নিজেও।’ সে যদি একজন কাফের হওয়া সত্ত্বেও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর খুশির কারণে তার প্রতি সোমবার আযাব লাঘব হয়, শাহাদাত অঙ্গুলি দিয়ে পানি বের হয়- যা খেয়ে সে তৃপ্ত হয়, একজন মুসলমান ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন ও আনন্দানুষ্ঠান করলে তাতে রহমত, বরকত লাভ এবং আযাব থেকে মুক্তিলাভের এক বিরাট সুযোগ তা যে কোন বিবেকবান ব্যক্তি সহজেই অনুধাবন করতে পারে। কবি শেখ সাদী (রহ.)-এর ভাষায় :

বন্ধুদের বঞ্চিত করার প্রশ্নই আসে না, তুমি তো এমন সত্তা যে, দুশমনের দিকেও লক্ষ্য রাখ।’ মিলাদুন্নবী উদযাপন দিবসকে কেন্দ্র করে রাসূলের পুরো জীবনকে আয়নার মতো নিজের জীবনের সামনে তুলে ধরা এবং সে অনুযায়ী ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ জীবন গড়ে তোলার সংকল্প গ্রহণের মতো উত্তম ও বরকতময় কাজ আর কী হতে পারে? রাসূলের মর্যাদা বর্ণনা করার সাথে সাথে তাঁর দাওয়াত ও হেদায়াত গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। অতীতে মনীষিগণ রাসূলের প্রশংসা বর্ণনার সাথে সাথে রাসূলের সুন্নাতকে তাঁদের জীবনে বাস্তবায়নের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। হযরত আলী (রা.) যেমন ছিলেন রাসূলের সুন্নাতের ধারক তদ্রূপ প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ। তিনি বলেন : নবুওয়াত বৃক্ষের মাঝে তিনি বাছাইকৃত আলোকের আধার, সম্মানের সর্বোচ্চ চূড়ায় অধিষ্ঠিত, বাতহা তথা মক্কা মুয়াজ্জমার মূলকেন্দ্র, অন্ধকারের বাতি, হেকমত ও প্রজ্ঞার উৎস-প্রস্রবণ।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১০৭) (চলবে)

লেখক- গবেষক, কলামিস্ট, মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান, পাঠান পাড়া, (খান বাড়ী) কদমতলী, সদর, সিলেট-৩১১১।


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

কোটি টাকার আইসসহ রামুতে যুবক আটক

কোটি টাকার আইসসহ রামুতে যুবক আটক

সব বিষয়ে পাস, বাস্তব প্রশিক্ষণে নম্বর না দেয়ায় ফেল ১৩ শিক্ষার্থী

সব বিষয়ে পাস, বাস্তব প্রশিক্ষণে নম্বর না দেয়ায় ফেল ১৩ শিক্ষার্থী

হজ পালনে সউদী গেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি

হজ পালনে সউদী গেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি

২২ মে থেকে বাজারে নওগাঁর আম, সবশেষে আম্রপালি

২২ মে থেকে বাজারে নওগাঁর আম, সবশেষে আম্রপালি

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের