ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

আল-কুরআনের যুগান্তকারী অর্থনীতি

Daily Inqilab মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখলী

২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তবে ব্যক্তিমালিকানা যে শর্তযুক্ত সে ইঙ্গিতও উক্ত আয়াতেই রয়েছে। মালিক হলেও নিজে সব ভোগ করতে পারবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। যেমন অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, “এবং তাদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থী (অভাবগ্রস্ত) ও বঞ্চিতদের হক” (সূরা জারিয়াত : আয়া-১৯)।

সকল সম্পদের মূল মালিক মহান আল্লাহ। এ বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বুঝে নেয়া উচিত। যেমন আমরা দেখতে পাই, সকল সম্পদের মূল উৎস তিনটা। (১) মাটি। (২) পানি। (৩) আগুন। খাদ্য, পানীয়সহ যত সম্পদ আমরা দেখতে পাব এই তিন জিনিসের বাইরে হবে না। হয়তো মাটির খনি থেকে এসেছে। যদি বলি প্লাস্টিক, তবে সেটা গাছ থেকে এসেছে আর গাছ মাটি থেকে এসেছে। ওই গাছ বড় হতে পানি লেগেছে। কারখানায় তৈরি হয়ে আসতে আগুন লেগেছে। আমাদেরকে ভেবে দেখতে হবে, এসবের কোনোটি কি মানুষ তৈরি করতে পেরেছে? না, কখনও না। মানুষ যতই বাহাদুরি করুক, হাঁক-ডাক দিক, চাঁদ অতিক্রম করে মঙ্গলগ্রহে চলে যাক কিন্তু তার দৌড় আল্লাহর দেওয়া মাটি, পানি ও আগুন পর্যন্তই। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা যা বপন কর সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কী? তোমরা কি তা উৎপন্ন কর, না আমি তা ফলাই?’ (সূরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৬৩-৬৪)। আল্লাহপাক আরও ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যে পানি পান কর তা সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরা কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি?’ (সূরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৬৮-৬৯)। আমরা সবাই জানি শিল্পোন্নয়নের এ যুগেও কল-কারখানাগুলোর অন্যতম উপাদান পানি। আল্লাহপাক চোখে আঙ্গুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিয়েছেন-তোমাদের সম্পদের মূল উৎস মাটি আমার দেওয়া, মাটির উর্বরতা আমার দেওয়া, বসবাসের উপযোগিতা আমার দেওয়া। এরপর পানিও আমি নাজিল করি। তোমরা কি পানি নাজিল করতে পার? না, কখনও না। এরপর আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যে আগুন জ্বালাও সে সম্পর্কে চিন্তা করেছ কী? তোমরা কি ইহার বৃক্ষ সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?’ (সূরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৭১-৭২)। তাহলে আগুনও আল্লাহর দেওয়া। মোটকথা অর্থ-সম্পদের মৌলিক যে উৎসগুলো, যেগুলো থেকে সম্পদ আহরিত হয় তার কোনটিই মানুষ তৈরি করতে পারেনি, পারবে না। মানুষ এগুলোকে কেন্দ্র করেই বড় বড় শিল্প তৈরি করছে। মানুষ এখন চাঁদে যাচ্ছে, মহাশূন্যে যাচ্ছে, মঙ্গলগ্রহে বসবাসের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু যেটাতে করে যাচ্ছে সেটা আল্লাহর দেওয়া সম্পদ লোহা থেকে তৈরি। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আমি নাজিল করেছি লৌহ। যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি এবং মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ’ (সূরা হাদীদ : আয়াত-২৫)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় সকল তাফসীরবিদগণ যানবাহন, বিমান সামগ্রী, কলকারখানা, অস্ত্র-শস্ত্রের কথাই বলেছেন। কারণ এসবই এর আওতায় আসবে। এসবগুলোতেই মানুষের কল্যাণ এবং প্রচণ্ড শক্তি রয়েছে। সকল সম্পদের মূল মালিক যেহেতু আল্লাহ সুতরাং আল্লাহ যাকে মালিকানা দিয়েছেন সে নিরংকুশ মালিকানার অধিকারী নয়; বরং তার মালিকানা শর্তযুক্ত মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রিত মালিকানা। সুতরাং আল্লাহ সম্পদ সম্পর্কে যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো তাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কিছু করতে হবে এমন শর্ত, কিছু ছাড়তে হবে এমন শর্ত। ব্যক্তির শর্তযুক্ত মালিকানা কুরআন স্বীকার করেছে। যেমন নিজের বাড়ি-ঘর সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কোনো ঘরে ঘরবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে প্রবেশ করো না’ (সূরা নূর : আয়াত-২৭)। ঘরের মালিকানা যারটা তার। যার যার ঘরের মালিকানা তার তার। এজন্যই তো অনুমতি নিতে হবে। অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা উৎপন্ন করে দেই-এর মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা হতে তোমরা ব্যয় কর’ (সূরা বাকারা : আয়াত-২৬৭)। অর্থাৎ যেটা তোমরা কামাই করেছ সেটার মালিকানা তোমাদের নিজেদের। আরও ইরশাদ হচ্ছে, ‘ইয়াতীমদের তাদের সম্পদ দিয়ে দাও’ (সূরা নিসা : আয়াত-২)। এখানেও ব্যক্তিমালিকানা প্রমাণিত হয়েছে। এভাবে ব্যক্তিমালিকানার প্রমাণে বহু আয়াত রয়েছে।

কুরআন সম্পদ ভোগ করার ক্ষেত্র নির্ধারণ করে দিয়েছে। মানুষ সম্পদ ভোগ করতে পারবে তবে সেটা হতে হবে হালাল সম্পদ। সম্পদ উপার্জন ও ভোগ করার ক্ষেত্রে কুরআন হালাল হওয়ার শর্ত আরোপ করেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে তা হতে তোমরা আহার কর’ (সূরা বাকারা : আয়াত-১৬৮)। হালালের উক্ত বিধানটি সর্বজনীন। মুসলমান হলেই তাকে হালাল খেতে হবে। এজন্য নবী ও রাসূলগণকেও একই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকর্ম কর’ (সূরা মুমিনুন : আয়াত-৫১)। এ সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহপাক মুমিনদের সে নির্দেশই দিয়েছেন যা তিনি তাঁর রাসূলগণকে দিয়েছেন’ (মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড : পৃষ্ঠা-৩২৬)। হালালের বিপরীত হারাম। যা মুমিনের জন্য নিষিদ্ধ। এ ধরনের অনেক হারামের কথা কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতীমার বেদী ও জুয়ার তীর এসবই অপবিত্র, শয়তানি কাজ। সুতরাং এসব পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর’ (সূরা মায়িদা : আয়াত-৯০)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং সেই পশু যা আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারো নামে যবাই করা হয়েছে...’ (সূরা মায়িদা : আয়াত-৩)। সম্পদ অর্জনে একটি মৌলিক নিষেধাজ্ঞার কথা পবিত্র কুরআনে বিধৃত হয়েছে এভাবে-‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার জন্য তা (এ সম্পর্কে মামলা) বিচারকের নিকট পেশ করো না’ (সূরা বাকারা : আয়াত-১৮৮)। পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড় বিপদগুলোর অন্যতম হল, সম্পদ এখানে এককেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রের অধিকাংশ সম্পদ মুষ্টিমেয় ধনাঢ্যদের হাতে চলে যায়। জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংস্থার জরিপে বার বার এসেছে যে, শুধু ১% লোক ভোগ করে পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি সম্পদ। পক্ষান্তরে আল-কুরআনের অর্থনৈতিক বিধানগুলো এমনভাবে সাজানো, যাতে এত বৈষম্য সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। আল-কুরআনের অর্থব্যবস্থা সর্বজনীন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘যাতে করে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান কেবল তাদের মধ্যেই সম্পদ আবর্তন না করে’ (সূরা হাশর : আয়াত-৭)। কেউ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে আর কেউ অনাহারে দিনাতিপাত করবে-আল-কুরআনের অর্থব্যবস্থায় এমন সুযোগ নেই। পুঁজিবাদের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে সুদ। ধনী-দরিদ্র বৈষম্য বাড়ার পেছনে-যেসব উপাদান দায়ী সুদ তার অন্যতম। আল-কুরআনে সুদকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা প্রকৃত মুমিন হয়ে থাকলে সুদের যে অংশই (০.০০১ ভাগ বা তার চেয়ে কম হলেও হারাম)। অবশিষ্ট রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও’ (সূরা বাকারা : আয়াত ২৭৮-২৭৯)। ধনী-গরীবের মধ্যে যখন বৈষম্য সৃষ্টি হয় তখন সমাজের অবস্থা কী দাঁড়ায়-সে সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সে যখন প্রস্থান করে তখন জমিনে অশান্তি সৃষ্টি এবং ফসল ও (জীব-জন্তুর) বংশ নিপাতের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন না’ (সূরা বাকারা : আয়াত-২০৫)। হারাম পেশার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা বা করানো যাবে না। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমাদের দাসীগণকে সততা রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন-লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিণী হতে বাধ্য করো না’ (সূরা নূর : আয়াত-৩৩)। বর্তমানে নানাভাবে যৌনচর্চা করা হচ্ছে। যৌনকর্মীদের নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। যৌনকর্মীদের ভদ্রনাম দেওয়া হচ্ছে। পতিতালয়ের জায়গায় যৌনপল্লী, পতিতা হয়ে গেলে যৌনকর্মী-সেক্স ওয়ার্কার। নাম যাই হোক, এরূপ কাজ ও এর দ্বারা অর্থ উপার্জন করা জঘণ্য অপরাধ। কখনও অপচয় করা যাবে না। ইরশাদ হচ্ছে, ‘এবং আহার করবে ও পান করবে কিন্তু অপব্যয় করবে না। আল্লাহ অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না’ (সূরা আরাফ : আয়াত-৩১)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয় করে না, কার্পণ্যও করে না বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়’ (সূরা ফুরকান : আয়াত-৬৭)। বর্তমান সময়ে নামিদামি হোটেল-রেস্তোরাগুলোতে বড় বড় অনুষ্ঠান ও পার্টিগুলোতে যে পরিমাণ খাবার ধনীর দুলালেরা অপচয় করে ফেলে তা দ্বারা কি হাজার হাজার দরিদ্র শিশুর মুখে দুবেলা অন্ন দেওয়া যেত না? শেষোক্ত আয়াতটিতে অপচয়ের সাথে সাথে কার্পণ্য না করার কথাও বলা হয়েছে। অহেতুক কার্পণ্যও ইসলাম সমর্থন করে না। অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এবং কেহ কার্পণ্য করলে ও নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা বর্জন করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ’ (সূরা লাইল : আয়াত ৮-১০)। সম্পদ আছে বলেই যেখানে-সেখানে তা ব্যয় করা যাবে না। ইরশাদ হচ্ছে, ‘মানুষের মধ্যে এক-শ্রেণির লোক আছে যারা ‘লাহওয়াল হাদীস’ বা অবান্তর কথাবার্তা ক্রয় করে থাকে’ (সূরা লুকমান : আয়াত-৬)। উক্ত আয়াতে ‘লাহওয়াল হাদীস’ দ্বারা গান-বাজনা, খেল-তামাশা ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে। ধনী ব্যক্তিদেরকে তাদের সম্পদের হক তথা যাকাত-উশর ইত্যাদি আদায় করতে বলা হলে এবং ‘এ সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ’-বলা হলে তাদের কেউ কেউ জবাব দেয়, এসব তো আমার পরিশ্রম ও মেধার ফসল। এ ধরনের জবাব কিন্তু নতুন নয়। কারুনের সাথে মুসা (আ.)-এর যে কথোপকথন হয়েছে তাতেও আল-কুরআনের অর্থনীতির অনেক বিষয় আছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘কারুন ছিল মুসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি। কিন্তু সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল। আমি তাকে এমন ধনভাণ্ডার দিয়েছিলাম, যার চাবিগুলো বহন করা একদল শক্তিশালী লোকের পক্ষেও কষ্টকর ছিল। স্মরণ কর, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দম্ভ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তোমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা দ্বারা আখেরাতের আবাস লাভের চেষ্টা কর এবং দুনিয়া থেকেও তোমার অংশ ভুলে যেও না এবং আল্লাহ যেমন তোমার উপর অনুগ্রহ করেছেন, তেমনি তুমিও অন্যের প্রতি অনুগ্রহ কর এবং পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না। সে বলল, এসব তো আমি আমার জ্ঞানবলে লাভ করেছি’ (সূরা কাসাস : আয়াত ৭৬-৭৮)। আল্লাহর রাস্তায় দান করার পাশাপাশি নিজের খরচাদির জন্য সম্পদের একটি অংশ রাখার কথাও উক্ত আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে। সম্পদের উপর বাধ্যতামূলক অন্যদের যে অধিকার রয়েছে তার একটি হল উশর। ইরশাদ হচ্ছে, ‘এবং যখন ফসল কাটার দিন আসবে তখন তার হক আদায় করবে’ (সূরা আনআ’ম : আয়াত-১৪১)।

অর্থাৎ যা খাদ্য-শস্য হবে তার এক দশমাংশ (সেচে হলে ৫%) গরীবদের জন্য দিতে হবে। জমির মালিকের জন্য এটা দরিদ্রের প্রতি কোনো করুণা নয়। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর অন্যতম যাকাত। আল-কুরআনের যেখানেই নামাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেখানেই যাকাত আদায়রে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নামাজ মানুষকে পাপ থেকে দূরে রাখে এবং যাকাত মানুষকে দারিদ্রমুক্ত করে। যাকাত ব্যবস্থা দারিদ্র্য বিমোচনের সর্বোত্তম হাতিয়ার। একটি সমাজে সুষ্ঠুভাবে যাকাত বণ্টন করা হলে সেই সমাজে কখনও দারিদ্র্য থাকতে পারে না। এজন্য আল-কুরআনে যাকাত আদায়ের জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সকল সম্পদের মূল মালিক আল্লাহ। সেই সম্পদের মধ্যে যা কিছুর মালিকানা মানুষকে দেওয়া হেেছ তা হল শর্তযুক্ত মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রিত মালিকানা। সুতরাং অর্থ-সম্পদ উপার্জন করতে হবে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী এবং ব্যয় করতে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী-এটাই আল-কুরআনের অর্থনীতির মূলকথা। আল-কুরআনের অর্থ ব্যবস্থা সর্বজনীন। আল-কুরআনের অর্থব্যবস্থার পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে সমাজ-রাষ্ট্রে কেউ দারিদ্র্য থাকতে পারে না। (সমাপ্ত)

লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী